গণমাধ্যমের ওপর নগ্ন হামলা’—দোষীর গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে উত্তাল সাংবাদিক সমাজ
ঢাকা: রাজধানী ঢাকায় পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে দৈনিক যুগান্তর মাল্টিমিডিয়ার স্টাফ রিপোর্টার আবু সালেহ মুসাকে ফেসবুক লাইভে এসে প্রকাশ্য হেনস্তা করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়েছে দেশের সাংবাদিক সমাজ। এই ঘটনাকে ‘গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে নগ্ন হামলা’ আখ্যা দিয়ে সাংবাদিক সংগঠনগুলো অবিলম্বে অভিযুক্ত বিএনপি সমর্থককে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের দাবি জানিয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চলমান চিকিৎসার খবর সংগ্রহের জন্য আবু সালেহ মুসা নিয়মিত এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
গত ১ ডিসেম্বর মুসার করা ‘এভারকেয়ারের সামনে ছবি ও সেলফি তোলার হিড়িক’ শিরোনামের একটি ভিডিও প্রতিবেদন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এই প্রতিবেদনের জেরে পরদিনই, অর্থাৎ ২ ডিসেম্বর, মো. রফিক ইসলাম নামে বিএনপি সমর্থক পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তি ঘটনাস্থলে এসে সাংবাদিক মুসাকে সশরীরে হেনস্তা করেন।
অভিযুক্ত রফিক ইসলাম শুধু হেনস্তাই করেননি, তিনি নিজের ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে এসে সাংবাদিক মুসাকে অপমানজনকভাবে প্রশ্নবানে জর্জরিত করেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি সেখানে উপস্থিত অন্যান্য সাংবাদিকদেরও একে একে লাইভে পরিচয় প্রকাশ করতে বাধ্য করার চেষ্টা করেন। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের বাসিন্দা মো. রফিক ইসলাম ঢাকায় থাকলেও তিনি দলীয় সমর্থকের পরিচয় কাজে লাগিয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে জানা গেছে।
এই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ জানিয়েছে মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (এমআরএ) ও অন্যান্য সাংবাদিক প্ল্যাটফর্ম।
এমআরএ সভাপতি ফখরুল ইসলাম বলেন, “সাংবাদিক হেনস্তার এই ঘটনা গভীর উদ্বেগজনক। আমরা চাই—বিএনপি দ্রুত পদক্ষেপ নিক এবং অভিযুক্তকে অবিলম্বে আইনের আওতায় আনা হোক।”
এমআরএ সাধারণ সম্পাদক আকতারুজ্জামান বলেন, “একজন সাংবাদিকের ওপর হামলা মানেই পুরো গণমাধ্যমের ওপর হামলা। অপরাধীকে শাস্তির মুখোমুখি করতেই হবে—এটাই আমাদের স্পষ্ট দাবি।”
Center for the Enforcement of Human Rights and Legal Aid (CEHRLA)-এর সদস্য ও সাংবাদিক নেতা সাহেদ আহমদ রিপন এই হামলাকে স্পষ্ট ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি জানান, পেনাল কোড, ১৮৬০ অনুযায়ী অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আঘাত/বলপ্রয়োগ, হুমকি, পথরোধ, এবং মানহানির মতো ধারায় অভিযোগ আনা সম্ভব।
সাংবাদিকদের জন্য বিশেষ সুরক্ষার অভাব তুলে ধরে তিনি সাংবাদিকতা সুরক্ষা আইন (প্রস্তাবিত ২০২৫) দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান। এই প্রস্তাবিত আইনে হামলাকারীদের জন্য ১–৫ বছরের কারাদণ্ড এবং কমপক্ষে ১ লাখ টাকা জরিমানা সহ ৩০ দিনের মধ্যে দ্রুত তদন্তের বিধান রয়েছে।
সাংবাদিক সংগঠনগুলো সম্মিলিতভাবে দুই দফা দাবি জানিয়েছে:
সংগঠনগুলো হুঁশিয়ারি দিয়েছে, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে পেশাগত দায়িত্বপালন চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হবে।
সংগঠনগুলো হুঁশিয়ারি দিয়েছে, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে পেশাগত দায়িত্বপালন চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হবে।

প্রযুক্তি সহায়তায়: softhost
Leave a Reply